সামাজিক আন্দোলনের সুফল হিসেবেই ডিএনসিসি এলাকায় এখনও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম এবং এই সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সকালে রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর ভবনের বাংলাদেশ ক্লাবে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে পরিচালিত সর্বশেষ চিরুনি অভিযান সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরার সময় এ কথা বলেন তিনি।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, নিজেদের সুস্থতার জন্যই সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা সামাজিক আন্দোলনের সুফল হিসেবেই ডিএনসিসি এলাকায় এখনও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ডিএনসিসি এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা রাজধানীর মোট আক্রান্তের মাত্র ২০ শতাংশ হলেও শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’ আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি বছরের ২৭ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় এক লক্ষ ১০ হাজার ৯১টি স্থাপনা পরিদর্শন করে ৯৬৩টি স্থাপনায় এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়।

এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদলতের মাধ্যমে ২৩৬টি মামলায় ৪৮ লক্ষ ৯৯ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় এবং ২৮টি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়। ডিএনসিসি মেয়র এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় কাউন্সিলর ও ডিএনসিসির সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মাঠে সক্রিয় থাকার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেন। ‘নিজেদের বাসাবাড়িতে ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যাতে তিন দিনের বেশি পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে’ উল্লেখ করে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘তিন দিনে এক দিন, জমা পানি ফেলে দিন।

‘ তিনি অব্যবহৃত এসব জিনিস নিকটস্থ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিসে জমা দেওয়া হলে জমাদানকারীকে পুরস্কৃত করার কথা আবারও পুনর্ব্যক্ত করেন। মেয়র আতিক বলেন, ‘ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিসে জমা দেওয়া প্রতিটি অব্যবহৃত কমোড ও টায়ারের জন্য ৫০ টাকা এবং প্রতিটি ডাবের খোসা, রংয়ের কৌটা ও চিপসের প্যাকেটের জন্য ৫ টাকা হারে আর্থিক পুরষ্কার প্রদান করা হবে।’ তিনি সময়ের প্রয়োজনে নিজেদের সুস্থতার জন্য নগরবাসীর প্রতি ‘১০টায় ১০ মিনিট প্রতি শনিবার, নিজ নিজ বাসাবাড়ি করি পরিষ্কার’ স্লোগানটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলনকে আরো জোরদার করার আহ্বান জানান।

বলেন, ‘মাস্ক আমার, সুরক্ষা সবার’, তাই করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে আমাদের প্রত্যেককেই সঠিকভাবে মাস্ক পরিধানসহ সরকারি নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। প্রধান অতিথি হিসেবে নিজের গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা শেষে মো. আতিকুল ইসলাম নগরবাসীর মাঝে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াবিরোধী আকর্ষণীয় ব্যানার ও ফেস্টুনে সুসজ্জিত খোলা ট্রাকে করে ডিএনসিসির ১ নম্বর অঞ্চলের উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এসময় অন্যদের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান এবং স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।